মহাকাশে প্রথম বিলাসবহুল হোটেল - Online Business

Breaking

Home Top Ad

 


Friday, April 27, 2018

মহাকাশে প্রথম বিলাসবহুল হোটেল

মহাকাশে স্থাপন করা হচ্ছে বিলাসবহুল হোটেল, যার নাম ‘অরোরা স্টেশন’। চলতি মাসের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সান হোসেতে অনুষ্ঠিত স্পেস ২.০ সম্মেলনে ওই মহাকাশ হোটেল তৈরির ঘোষণা দেয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ প্রযুক্তিবিষয়ক উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান ওরিয়ন স্প্যান ওই হোটেল তৈরি করবে। ১২ দিনের মহাকাশ সফরে এখানে দুজন ক্রু সদস্যসহ একসঙ্গে ছয়জন থাকতে পারবেন। ২০২২ সালে প্রথম অতিথি হিসেবে সেখানে যাওয়ার সুযোগ থাকবে।

 যেখান থেকে এক দিনে ১৬ বার সূর্যোদয় দেখতে পাওয়া যাবে, মহাশূন্যে ভেসে বেড়ানো যাবে। মহাশূন্যে থেকে পৃথিবীকে কেমন দেখায়, সে অভিজ্ঞতাও নেয়া যাবে। তবে এর জন্য ধৈর্য ধরতে হবে আরও চার বছর। তবে এর জন্য প্রতি জনকে গুণতে হবে ৭৮ কোটি ৮১ লাখ ২০ হাজার টাকা বা ৯৫ লাখ মার্কিন ডলার। এ টাকা খরচ হবে বিশ্বের প্রথম বিলাসবহুল মহাকাশ হোটেলে থাকা-খাওয়ার বিল হিসেবে। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ হোটেল সম্পর্কে নানা তথ্য।

ওরিয়ন স্প্যানের প্রধান নির্বাহী ফ্র্যাঙ্ক বাংগার বলেন, সবার জন্য মহাকাশ ভ্রমণের সুযোগ করে দেওয়ার লক্ষ্য তাঁদের। মহাকাশে হোটেল চালুর পরপরই কম খরচে সেখানে সবাইকে থাকার সুযোগ দেওয়া হবে। দুই সপ্তাহের ভ্রমণে প্রায় ১০০ কোটি মার্কিন ডলার খরচের বিষয়টি অনেকের কল্পনা বাইরে। তবে ওরিয়ন স্প্যানের দাবি, সত্যিকারের মহাকাশচারীর অভিজ্ঞতা পাওয়া যাবে এতে।

বার্গনার বলেন, মহাকাশ স্টেশনে যেতে নভোচারীদের ২৪ মাসের বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু তাঁরা একে তিন মাসে নামিয়ে এনেছেন। ১২ দিনের এ রোমাঞ্চকর যাত্রা পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে ২০০ মাইল ওপরে লো আর্থ অরবিটে (এলইপি) উড়বেন। সেখান থেকে পৃথিবীর চমৎকার দৃশ্য পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। এ হোটেল পৃথিবীকে প্রতি ৩০ মিনিটে প্রদক্ষিণ করবে। অর্থাৎ হোটেলের অতিথিরা প্রতি ২৪ ঘণ্টায় ১৬ বার সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দেখতে পাবেন।

হোটেলে বসে অতিথিরা খাবার উৎপাদনের মতো গবেষণায় অংশ নিতে পারবেন। এসব খাবার তাঁরা উপহার হিসেবে পৃথিবীতে সঙ্গে নিতে পারবেন। উচ্চগতির ওয়্যারলেস ইন্টারনেট সিস্টেম থাকবে সেখানে। সরাসরি পৃথিবীতে লাইভ ভিডিও চ্যাট করা যাবে। এ ছাড়া পৃথিবীতে ফেরার পর তাঁদের বিশেষ সম্মান জানানো হবে। ভরশূন্য অনুভূতির মজা নেওয়া ছাড়াও অতিথিরা মুক্তভাবে হোটেলের ভেতর ভেসে থেকে উত্তর ও দক্ষিণ মেরু প্রভার দৃশ্য দেখতে পাবেন।

অবশ্য মহাকাশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা দিতে ওরিয়ন স্প্যানের মতো আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে অ্যাক্সিওম স্পেস। টেক্সাসভিত্তিক ওই প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের সাবেক এক ব্যবস্থাপক। ২০২৪ সালে একটি বাণিজ্যিক স্পেস স্টেশন চালু করবে প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে রিচার্ড ব্র্যানসনের ভার্জিন গ্যালাকটিক আড়াই লাখ মার্কিন ডলারের বিনিময়ে সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে ভরশূন্য অভিজ্ঞতা দিতে কাজ করছে। ২০০৯ সালে এটি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখনো প্রথম যাত্রা তারিখ ঠিক হয়নি।

অবশ্য মহাকাশ ভ্রমণে খরচ যা-ই হোক, যাত্রী খুব কম পাওয়া যাবে। তবে বার্গনার বলছেন, অরোরা স্টেশন শুধু হোটেল হিসেবে কাজ করবে না; এটি মহাশূন্যে ভরশূন্য অবস্থায় বিভিন্ন গবেষণা ও মহাশূন্যে কারিগরি কাজে মহাকাশ সংস্থাগুলোর জন্য কাজ করবে।